জমিদার অন্নদা মোহন রায় চৌধুরী
ইনি সেই জমিদার অন্নদা মোহন রায় চৌধুরী, যিনি কারমাইকেল কলেজ প্রতিষ্ঠায় ১০ হাজার টাকা অনুদানের ঘোষণা দিলেও লিখতে গিয়ে একটি শূন্য বেশী লিখে ফেলায় তা হয়ে যায় এক লক্ষ টাকা। পরে অবশ্য তিনি অঙ্গীকারকৃত টাকার অংকই (এক লক্ষ) দান করেছিলেন ।
১৯১৩-১৪ সালে রংপুরে একটি প্রথম শ্রেণীর কলেজ প্রতিষ্ঠার জন্য রংপুর জেলা কালেক্টর জে.এন গুপ্ত সক্রিয়ভাবে উদ্যোগী হয়ে উঠেন। কলেজ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে তহবিল সংগ্রহের জন্য তিনি রংপুর অঞ্চলের রাজা, জমিদার, বিত্তবান ব্যাক্তি ও শিক্ষানুরাগীদের নিয়ে সভা ডাকেন। তার এই উদ্যোগে সাড়া দিয়ে অর্থ প্রদান করেন শীর্ষস্থানীয় জমিদারবৃন্দ। অর্থ সংগ্রহের জন্য ডাকা সভায় একটি মজার ঘটনা ঘটেছিল।
সেদিনের সেই সভায় তৎকালীন দানশীল জমিদার ও বিত্তবান ব্যক্তিবর্গ কে কত টাকা দিবেন তা মুখে বলে অঙ্গীকার করেন এবং কাগজে লিপিবদ্ধ করেন। এক্ষেত্রে টেপার জমিদার তার মুখে উচ্চারিত ১০,০০০ টাকা লিখতে গিয়ে টাকার অংকের জায়গায় ভুল করে ডান পাশে একটি শূন্য বেশী বসিয়ে দিয়েছিলেন। ফলে তার টাকার পরিমাণ দাড়ায় এক লক্ষ টাকা। সভা শেষে সকলের লিখিত টাকার অংক যখন পড়ে শোনানো হচ্ছিল তখন অন্নদা মোহন রায় চৌধুরী (টেপার জমিদার) তার অঙ্গীকারকৃত টাকার অংক শুনে বিচলিত হয়ে পড়েছিলেন। কারও কারও মতে তিনি মূর্ছা গিয়েছিলেন। তবে তিনি কলেজ প্রতিষ্ঠায় অঙ্গীকারকৃত টাকার অংকই দান করেছিলেন । তার এই দানকে স্মরণীয় করে রাখার জন্যই কারমাইকেল কলেজে প্রাচীন স্থাপত্য শৈলীর নিদর্শন দর্শনীয় মূল ভবনের ঠিক মাঝের হল ঘরটির নামকরণ করা হয় তার নামানুসারে। অর্থাৎ “অন্নদা মোহন হল”। সেখানেই কলেজ প্রতিষ্ঠার জন্য যারা অর্থ এবং জমি দান করেছিলেন তাদের সকলের নাম পাথরে খোদাই করে লেখা আছে। ২৮ জন দাতাগণের মধ্যে সর্ব প্রথম নামটিই হলো অন্নদা মোহন রায় চৌধুরী বাহাদুর।
টেপার জমিদারের বাগান বাড়িতেই আজকের সোনালী ব্যাংক দাঁড়িয়ে আছে। রংপুরের অনেক জনহিতকরর কাজের সাথে এই জমিদারের নাম মিশে আছে। যাদের মধ্যে কারমাইকেল কলেজ ছাড়াও রয়েছে সরকারী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, টেপা মধুপুর এলাকায় ইংরেজি স্কুল, পোস্ট অফিস, অন্নদানগর রেল ষ্টেশন।
লিখেছেনঃ Riyadh Anwar Shubho
Follow us on Facebook
No comments:
Post a Comment
Thank You So much for Your Valuable feedback